Get 1000+ প্রকৃতি নিয়ে বিদায় শীতের কবিতা | কাজী নজরুল ইসলামের একুশের ও মুক্তিযুদ্ধের কবিতা

Sadia islam
0

প্রকৃতি নিয়ে কবিতা , বিদায় কবিতা , শীতের কবিতা , একুশের কবিতা , নজরুলের কবিতা,  কাজী নজরুল ইসলাম কবিতা, মুক্তিযুদ্ধের কবিতা

প্রকৃতি নিয়ে কবিতা
, বিদায় কবিতা , শীতের কবিতা , একুশের কবিতা , নজরুলের কবিতা,  কাজী নজরুল ইসলাম কবিতা, মুক্তিযুদ্ধের কবিতা,
আমাদের এই সাইটে বাংলা ইমেজে আপনাদের সবাইকে আমন্ত্রণ আপনারা যে যে প্রকৃতি নিয়ে কবিতা  বিদায় কবিতা  শীতের কবিতা পেতে চান তাদের জন্য বাংলা ইমেজ নিয়ে আসলো সকল ধরনের তথ্য সুবিধা এক্ষেত্রে আপনারা যে যা চাচ্ছেন তা এখান থেকে পেয়ে যাবেন |

প্রকৃতি নিয়ে কবিতা

প্রকৃতি নিয়ে কবিতা প্রকৃতি নিয়ে কবিতা প্রকৃতি নিয়ে কবিতা বাংলা ইমেজে  প্রকৃতি নিয়ে কবিতা সম্পর্কে এখানে নানান ধরনের তথ্য পেয়ে যাবেন যেটা সার্চ করলে সহজে বের করতে পারবেন এর জন্য আমরা সবাই মুগ্ধ কেননা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাদের চোখ কারায় |

ওগো বাদলের পরী!

যাবে কোন্ দূরে ঘাটে বাঁধা তব কেতকী পাতার তরী!

ওগো ও ক্ষণিকায়, পুব-অভিসার ফুরাল কি আজ তব?

পহিল ভাদরে পড়িয়াছে মনে কোন্ দেশ অভিনব?

তোমার কপোল-পরশ না পেয়ে পাণ্ডুর কেয়া-রেণু/

তোমারে স্মরিয়া ভাদরের ভরা নদীতটে কাঁদে বেনু।

কুমারী ভীরু-বেদনা-বিধূর প্রণয়-অশ্র“ সম।

ঝরিছে শিশির-সিক্ত সেফালী নিশি-ভোরে অনুপম।

ওগো ও কাজল মেয়ে,

উদাস আকাশ ছলছল চোখ তব মুখে আছে চেয়ে।

কাশফুল সম শুভ্র ধবল রাশ রাশ শ্বেত মেঘে

তোমার তরীর উড়িতেছে পাল উদাস বাতাস লেগে।

ওগো জলের দেশের কন্যা। তব ও বিদায় পথে

কাননে কাননে কদম-কেশর ঝরিছে প্রভাত হ’তে।

তোমার আদরে মুকুলিতা হয়ে ঊঠিল যে বল্লরী

তরুর কণ্ঠ জড়াইয়া তারা কাঁদে নিশিদিন ভরি।’

‘বৌ-কথা-কও’ পাখি

উড়ে গেছে কোথা, বাতায়নে বৃথা বউ করে ডাকাডাকি।

চাঁপার গেলাস গিয়াছে ভাঙিয়া, পিয়াসী মধুপ এসে’

কাঁদিয়া কখন গিয়াছে উড়িয়া কমল-কুমদী দেশে।

তুমি চলে যাবে দূরে,

ভদরের নদী দুকূল ছাপায়ে কাঁদে ছলছল সুরে!

যাব যবে দূর হিম-গিরি শিল, ওগো বাদলের পরী

ব্যথা ক’রে বুক উঠিবে না কভু সেথা কাহারেও স্মরি?

সেথা নাই জল, কঠিন তুষার, নির্মম শুভ্রতা-

কে জানে কী ভাল বিধুর ব্যথা -- না মধুর পবিত্রতা!

সেথা মহিমার ঊর্ধ্বে শিখরে নাই তরলতা হাসি,

সেথা যাও তব মুখের পায়ের বরষা-নূপুর খুলি,

চলিতে চকিতে চমকি’ উঠ না, কবরী উঠে না দুলি।

সেথা রবে তুমি ধেয়ান-মগ্না তাপসিনী অচপল,

তোমার আশায় কাঁদিবে ধারায় তেমনি “ফটিক-জল

বিদায় কবিতা

বিদায় কবিতা বিদায় কবিতা বিদায় কবিতা বাংলা ইমেজ নানা ধরনের বিদায় কবিতা পেয়ে যাবেন যেটা আপনাদের যার প্রয়োজন তা নিয়ে নিতে পারেন |

আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে।

     তব অবগুণ্ঠিত কুণ্ঠিত জীবনে

        কোরো না বিড়ম্বিত তারে।

           আজি খুলিয়ো হৃদয়দল খুলিয়ো,

               আজি ভুলিয়ো আপনপর ভুলিয়ো,

                      এই সংগীত-মুখরিত গগনে

                            তব গন্ধ তরঙ্গিয়া তুলিয়ো। 

                      এই বাহির ভুবনে দিশা হারায়ে

                 দিয়ো ছড়ায়ে মাধুরী ভারে ভারে।

      অতি নিবিড় বেদনা বনমাঝে রে

         আজি পল্লবে পল্লবে বাজে রে--

              দূরে গগনে কাহার পথ চাহিয়া

                   আজি ব্যাকুল বসুন্ধরা সাজে রে।

                           মোর পরানে দখিন বায়ু লাগিছে,

                                কারে দ্বারে দ্বারে কর হানি মাগিছে,

                                     এই সৌরভবিহ্বল রজনী

                         কার চরণে ধরণীতলে জাগিছে।

                      ওগো সুন্দর, বল্লভ, কান্ত,

                   তব গম্ভীর আহ্বান কারে।

শীতের কবিতা

শীতের কবিতা শীতের কবিতা শীতের কবিতা শীত আসলে আমাদের সবাইর কত না উপভোগ করে কতই না ভাল লাগে কতইনা শীত নিয়ে আমরা কতই না কতপতন করি শীত নিয়ে নানা ধরনের কবিতা এই পেইজে দেওয়া আছে আপনারা চাইলে এখান থেকে নিয়ে নিতে পারেন | 

শীতের সকাল

মনে করে দেয় 

অতিতের স্মৃতি 

মাখা দিন গুলির কথা ।

শীতের বিকেল

অতীতের চাদর ঘাঁটে 

কুয়াশাময় কিছু স্মৃতি,

আদুরে গন্ধ |

শীত নেমেছে প্রদোষকালে 

ঠোঁট মানেনা সিগারেটে 

ঠোঁট পেতে চায় সেই সময়ে 

তোমার ঠোঁটের ছায়া নিতে ।

শীতের হালকা আমেজ নিয়ে

আজকে এলো রাত 

ঘুমের দেশে যাও হারিয়ে 

স্বপ্ন বারাক হাত ।

হাঁসি নিয়ে আসলে শীত

বিশাল বিড়ম্বনা । হাঁসি শুরু হয় ঠিকই , 

কিন্তু শীতের কাঁপুনির সাথে 

হাসি একবার মিক্স হয়ে গেলে 

সে হাসি আর থামে না ।

তোমার গায়ে শীত নামে ভোরে 

আলস্য কাটায় মিঠে রোদ.

হাওয়ার নামে উত্তুরে চিঠি

শহরময় শীতবর্ষা হোক।

শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা 

এখন জালিয়াতিই ভরসা ।

শীতের সকালে,

স্মৃতির উষ্ণ পশমী 

কাপড় জড়ানোর আশায়।

জষ্ঠি মাসের ভরা রোদ্দুর 

খাঁ খাঁ মাঠে চলি কতদূর 

ঘামঝরা পথ নেইকো ছায়া 

রোদ্দুর তুমি বড় নিষ্ঠুর 

দামাল আষাঢ় পানী একরাশ 

রোদ্দুর তুমি ভেঙে ছারখার 

শা্রবণ মাসে সবুজের খেলা 

শীতের আকাশে মিঠে রোদ্দুর ।

একুশের কবিতা

একুশের কবিতা একুশের কবিতা একুশের কবিতা আমাদের বাঙ্গালীদের জন্য অনেক গর্ববোধ কেননা একুশ নিয়ে আমাদের কতই না জনপ্রিয় কবিতা রয়েছে কাজী নজরুল ইসলাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নানান ধরনের তথ্য এই পেজে আপনারা পেয়ে যাবেন এগুলো থেকে আপনারা আশা করি উপকৃত হবেন |

ভিতরমহলে খুব চুনকাম, কৃষ্ণচূড়া

এই তো ফোটার আয়োজন

বাড়িঘর কী রকম যেন তাকে হলুদ অভ্যাসবশে চিনি,

হাওয়া একে তোলপাড় করে বলে, একুশের ঋতু!

ধীরে ধীরে সন্ধ্যার সময় সমস্ত রঙ মনে পড়ে, সূর্যাস্তের

ন্নি সরলতা

হঠাৎ আমারই জামা সূর্যাস্তের রঙে ছেয়ে যায়,

আর আমার অজ্ঞাতে কারা আর্তনাদ করে ওঠে রক্তাক্ত রক্তিম

বলে তাকে!

আমি পুনরায় আকাশখানিরে চেয়ে দেখি

নক্ষত্রপুঞ্জের মৌনমেলা,

মনে হয় এঁকেবেঁকে উঠে যাবে আমাদের

ছিন্নভিন্ন পরাস্ত জীবন,

অবশেষে বহুদূরে দিগন্তের দিকচিহ্ন মুছে দিয়ে

ডাক দেবে আমরাই জয়ী!

নজরুলের কবিতা

নজরুলের কবিতা নজরুলের কবিতা নজরুলের কবিতা এটি জনপ্রিয় কেননা কবিতার মধ্যে নজরুলের কবিতা সর্বশেষ্ঠ কেননা নজরুলের কবিতা ধারায় আমাদের বাঙালিরা অনেক সফলতা অর্জন করেছে কেননা ওনার কবিতার মধ্যে এমন শক্তি আছে সফলতা নিয়ে নিতে উৎসাহ করে |

আপন-পিয়াসী 

 - কাজী নজরুল ইসলাম 

 আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন

       খুঁজি তারে আমি আপনার,

     আমি শুনি যেন তার চরণের ধ্বনি

       আমারি তিয়াসী বাসনায়।।

 আমারই মনের তৃষিত আকাশে

 কাঁদে সে চাতক আকুল পিয়াসে,

 কভু সে চকোর সুধা-চোর আসে

  নিশীথে স্বপনে জোছনায়।।

 আমার মনের পিয়াল তমালে হেরি তারে স্নেহ-মেঘ-শ্যাম,

 অশনি-আলোকে হেরি তারে থির-বিজুলি-উজল অভিরাম।।

     আমারই রচিত কাননে বসিয়া

     পরানু পিয়ারে মালিকা রচিয়া,

     সে মালা সহসা দেখিনু জাগিয়া,

      আপনারি গলে দোলে হায়।

কাজী নজরুল ইসলাম কবিতা

কাজী নজরুল ইসলাম কবিতা কাজী নজরুল ইসলাম কাজী নজরুল ইসলাম কবি ছিলেন তিনি সর্বদাই যে কবি লেখে কবিতা লিখেছেন সেটা সারাবিশ্বের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে তিনি শুধু কবি ছিলেন না আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা ছিলেন উনার কবিতার মাধ্যমে আমাদের অনেক সহানুভূতি ছিল কেননা নি এমন কবিতা লিখতেন বাস্তব জীবনে রূপান্তিত হত |

অ-নামিকা 

 - কাজী নজরুল ইসলাম 

 তোমারে বন্দনা করি 

 স্বপ্ন-সহচরী 

 লো আমার অনাগত প্রিয়া, 

 আমার পাওয়ার বুকে না-পাওয়ার তৃষ্ণা-জাগানিয়া! 

 তোমারে বন্দনা করি…. 

 হে আমার মানস-রঙ্গিণী, 

 অনন্ত-যৌবনা বালা, চিরন্তন বাসনা-সঙ্গিনী! 

 তোমারে বন্দনা করি…. 

 নাম-নাহি-জানা ওগো আজো-নাহি-আসা! 

 আমার বন্দনা লহ, লহ ভালবাসা…. 

 গোপণ-চারিণী মোর, লো চির-প্রেয়সী! 

 সৃষ্টি-দিন হ’তে কাঁদ’ বাসনার অন্তরালে বসি’- 

 ধরা নাহি দিলে দেহে।

 তোমার কল্যাণ-দীপ জ্বলিলে না 

 দীপ-নেভা বেড়া-দেওয়া গেহে। 

 অসীমা! এলে না তুমি সীমারেখা-পারে! 

 স্বপনে পাইয়া তোমা’ স্বপনে হারাই বারে বারে 

 অরুপা লো! রহি হ’য়ে এলে মনে, 

 সতী হ’য়ে এলে না ক’ ঘরে। 

 প্রিয় হ’য়ে এলে প্রেমে, 

 বধূ হয়ে এলে না অধরে! 

 দ্রাক্ষা-বুকে রহিলে গোপনে তুমি শিরীন্‌ শরাব,

 পেয়ালায় নাহি এলে!-

 ‘উতারো নেকার’- 

 হাঁকে মোর দুরন্ত কামনা! 

 সুদুরিকা! দূরে থাক’-ভালোবাসা-নিকটে এসো না। 

 তুমি নহ নিভে যাওয়া আলো, নহ শিখা। 

 তুমি মরীচিকা, 

 তুমি জ্যোতি।- 

 জন্ম-জন্মান্তর ধরি’ লোকে-লোকান্তরে তোমা’ করেছি আরতি, 

 বারে বারে একই জন্মে শতবার করি! 

 যেখানে দেখেছি রূপ,-করেছি বন্দনা প্রিয়া তোমারেই স্মরি’। 

 রূপে রূপে, অপরূপা, খুঁজেছি তোমায়, 

 পবনের যবনিকা যত তুলি তত বেড়ে যায়! 

 বিরহের কান্না-ধোওয়া তৃপ্ত হিয়া ভরি’

 বারে বারে উদিয়াছ ইন্দ্রধনুসমা, 

 হাওয়া-পরী 

 প্রিয় মনোরমা! 

 ধরিতে গিয়োছি-তুমি মিলায়েছ দূর দিগ্বলয়ে

 ব্যথা-দেওয়া রাণী মোর, এলে না ক’ কথা কওয়া হ’য়ে। 

  চির-দূরে থাকা ওগো চির-নাহি-আসা! 

 তোমারে দেহের তীরে পাবার দুরাশা 

 গ্রহ হ’তে গ্রহান্তরে ল’য়ে যায় মোরে! 

 বাসনার বিপুল আগ্রহে- 

 জন্ম লভি লোকে-লোকান্তরে! 

 উদ্বেলিত বুকে মোর অতৃপ্ত যৌবন-ক্ষুধা 

 উদগ্র কামনা, 

 জন্ম তাই লভি বারে বারে, 

 না-পাওয়ার করি আরাধনা!…. 

 যা-কিছু সুন্দর হেরি’ ক’রেছি চুম্বন, 

 যা-কিছু চুম্বন দিয়া ক’রেছি সুন্দর- 

 সে-সবার মাঝে যেন তব হরষণ 

 অনুভব করিয়াছি!-ছুঁয়েছি অধর 

 তিলোত্তমা, তিলে তিলে! 

 তোমারে যে করেছি চুম্বন 

 প্রতি তরুণীর ঠোঁটে 

 প্রকাশ গোপন। 

 যে কেহ প্রিয়ারে তার চুম্বিয়াছে ঘুম-ভাঙা রাতে, 

 রাত্রি-জাগা তন্দ্রা-লাগা ঘুম-পাওয়া প্রাতে, 

 সকলের সাথে আমি চুমিয়াছি তোমা’ 

 সকলের ঠোঁটে যেন, হে নিখিল-প্রিয়া প্রিয়তমা! 

 তরু, লতা, পশু, পাখী, সকলের কামনার সাথে 

 আমার কামনা জাগে,-আমি রমি বিশ্ব-কামনাতে! 

 বঞ্চিত যাহারা প্রেমে, ভুঞ্জে যারা রতি- 

 সকলের মাঝে আমি-সকলের প্রেমে মোর গতি! 

 যে-দিন স্রষ্টার বুকে জেগেছিল আদি সৃষ্টি-কাম, 

 সেই দিন স্রষ্টা সাথে তুমি এলে, আমি আসিলাম। 

 আমি কাম, তুমি হ’লে রতি, 

 তরুণ-তরুণী বুকে নিত্য তাই আমাদের অপরূপ গতি! 

 কী যে তুমি, কী যে নহ, কত ভাবি-কত দিকে চাই! 

 নামে নামে, অ-নামিকা, তোমারে কি খুঁজিনু বৃথাই? 

 বৃথাই বাসিনু ভালো? বৃথা সবে ভালোবাসে মোরে? 

 তুমি ভেবে যারে বুকে চেপে ধরি সে-ই যায় স’রে। 

 কেন হেন হয়, হায়, কেন লয় মনে- 

 যারে ভালো বাসিলাম, তারো চেয়ে ভালো কেহ 

 বাসিছে গোপনে। 

  সে বুঝি সুন্দরতর-আরো আরো মধু! 

 আমারি বধূর বুকে হাসো তুমি হ’য়ে নববধূ। 

 বুকে যারে পাই, হায়, 

 তারি বুকে তাহারি শয্যায় 

 নাহি-পাওয়া হ’য়ে তুমি কাঁদ একাকিনী, 

 ওগো মোর প্রিয়ার সতিনী।…. 

 বারে বারে পাইলাম-বারে বারে মন যেন কহে- 

 নহে, এ সে নহে! 

 কুহেলিকা! কোথা তুমি? দেখা পাব কবে? 

 জন্মেছিলে জন্মিয়াছ কিম্বা জন্ম লবে? 

 কথা কও, কও কথা প্রিয়া, 

 হে আমার যুগে-যুগে না-পাওয়ার তৃষ্ণা-জাগানিয়া! 

 কহিবে না কথা তুমি! আজ মনে হয়, 

 প্রেম সত্য চিরন্তন, প্রেমের পাত্র সে বুঝি চিরন্তন নয়। 

 জন্ম যার কামনার বীজে 

 কামনারই মাঝে সে যে বেড়ে যায় কল্পতরু নিজে। 

 দিকে দিকে শাখা তার করে অভিযান, 

 ও যেন শুষিয়া নেবে আকাশের যত বায়ু প্রাণ। 

 আকাশ ঢেকেছে তার পাখা 

 কামনার সবুজ বলাকা!  

 প্রেম সত্য, প্রেম-পাত্র বহু-আগণন, 

 তাই-চাই, বুকে পাই, তবু কেন কেঁদে ওঠে মন। 

 মদ সত্য, পাত্র সত্য নয়! 

 যে-পাত্রে ঢালিয়া খাও সেই নেশা হয়! 

 চির-সহচরী! 

 এতদিনে পরিচয় পেনু, মরি মরি!

 আমারি প্রেমের মাঝে রয়েছ গোপন, 

 বৃথা আমি খুঁজে মরি’ জন্মে জন্মে করিনু রোদন। 

 প্রতি রূপে, অপরূপা, ডাক তুমি, 

 চিনেছি তোমায়, 

 যাহারে বাসিব ভালো-সে-ই তুমি, 

 ধরা দেবে তায়! 

 প্রেম এক, প্রেমিকা সে বহু,

 বহু পাত্রে ঢেলে পি’ব সেই প্রেম- 

 সে শরাব লোহু। 

 তোমারে করিব পান, অ-নামিকা, শত কামনায়, 

 ভৃঙ্গারে, গোলাসে কভু, কভু পেয়ালায়!

মুক্তিযুদ্ধের কবিতা

মুক্তিযুদ্ধের কবিতা মুক্তিযুদ্ধের কবিতা যুদ্ধের কবিতা সম্পর্কে কি বলবো কেননা মুক্তিযোদ্ধার মানে অনেক সম্মানের কবিতা মুক্তিযোদ্ধার পথ ছিলনা আমাদের দেশকে স্বাধীন করে ওরা স্বীকৃতি লাভ করেছেন তা কোন সময়ে ভাষায় প্রকাশ করে বোঝানো যাবে না তাই মুক্তিযুদ্ধের কবিতা এটার মধ্যে রয়েছে সহানুভূতি কত ভালবাসা কত ধরনের নানান স্মৃতি যার ফলে আমরা এখানে গর্ববোধ অনুভব সম্পর্কে কবিতা মুক্তিযোদ্ধার‌ কবিতা ইহবে |

আজ রাত্রে বালিশ ফেলে দাও, মাথা রাখো পরস্পরের বাহুতে,

শোনো দূরে সমুদ্রের স্বর, আর ঝাউবনে স্বপ্নের মতো নিস্বন,

ঘুমিয়ে পোড়ো না, কথা ব’লেও নষ্ট কোরো না এই রাত্রি-

শুধু অনুভব করো অস্তিত্ব।

কেন না কথাগুলোকে বড়ো নিষ্ঠুরভাবে চটকানো হ’য়ে গেছে,

কোনো উক্তি নির্মল নয় আর, কোনো বিশেষণ জীবন্ত নেই;

তাই সব ঘোষণা এত সুগোল, যেন দোকানের জানালায় পুতুল-

অতি চতুর রবারে তৈরি, রঙিন।

কিন্তু তোমরা কেন ধরা দেবে সেই মিথ্যায়, তোমরা যারা সম্পন্ন,

তোমরা যারা মাটির তলায় শস্যের মতো বর্ধিষ্ণু?

বোলো না ‘সুন্দর’, বোলো না ‘ভালোবাসা’, উচ্ছ্বাস হারিয়ে ফেলো না

নিজেদের-

শুধু আবিষ্কার করো, নিঃশব্দে।

আবিষ্কার করো সেই জগৎ, যার কোথাও কোনো সীমান্ত নেই,

যার উপর দিয়ে বাতাস ব’য়ে যায় চিরকালের সমুদ্র থেকে,

যার আকাশে এক অনির্বাণ পুঁথি বিস্তীর্ণ-

নক্ষত্রময়, বিস্মৃতিহীন।

আলিঙ্গন করো সেই জগৎকে, পরষ্পরের চেতনার মধ্যে নিবিড়।

দেখবে কেমন ছোটো হ’তেও জানে সে, যেন মুঠোর মধ্যে ধ’রে যায়,

যেন বাহুর ভাঁজে গহ্বর, যেখানে তোমরা মুখ গুঁজে আছো

অন্ধকারে গোপনতায় নিস্পন্দ-

সেই একবিন্দু স্থান, যা পবিত্র, আক্রমণের অতীত,

যোদ্ধার পক্ষে অদৃশ্য, মানচিত্রে চিহ্নিত নয়,

রেডিও আর হেডলাইনের বাইরে সংঘর্ষ থেকে উত্তীর্ণ-

যেখানে কিছুই ঘটে না শুধু আছে সব

সব আছে- কেননা তোমাদেরই হৃদয় আজ ছড়িয়ে পড়লো

ঝাউবনে মর্মর তুলে, সমুদ্রের নিয়তিহীন নিস্বনে,

নক্ষত্র থেকে নক্ষত্রে, দিগন্তের সংকেতরেখায়-

সব অতীত, সব ভবিষ্যৎ আজ তোমাদের।

আমাকে ভুল বুঝোনা। আমি জানি, বারুদ কত নিরপেক্ষ,

প্রাণ কত বিপন্ন।

কাল হয়তো আগুন জ্বলবে দারুণ, হত্যা হবে লেলিহান,

যেমন আগে, অনেকবার, আমাদের মাতৃভুমি এই পৃথিবীর

মৃত্তিকায়-

চাকার ঘূর্ণনের মতো পুনরাবৃত্ত।

তবু এও জানি ইতিহাস এক শৃঙ্খল, আর আমরা চাই মুক্তি,

আর মুক্তি আছে কোন পথে, বলো, চেষ্টাহীন মিলনে ছাড়া?

মানুষের সঙ্গে মানুষের মিলন, মানুষের সঙ্গে বিশ্বের-

যার প্রমাণ, যার প্রতীক আজ তোমরা।

নাজমা, শামসুদ্দিন, আর রাত্রির বুকে লুকিয়ে-থাকা যত প্রেমিক,

যারা ভোলোনি আমাদের সনাতন চুক্তি, সমুদ্র আর নক্ষত্রের সঙ্গে,

রচনা করেছো পরস্পরের বাহুর ভাঁজে আমাদের জন্য

এক স্বর্গের আভাস, অমরতায় কল্পনা :

আমি ভাবছি তোমাদের কথা আজকের দিনে, সারাক্ষণ-

সেই একটি মাত্র শিখা আমার অন্ধকারে, আমার চোখের সামনে

নিশান।

মনে হয় এই জগৎ-জোড়া দুর্গন্ধ আর অফুরান বিবমিষার বিরুদ্ধে

শুধু তোমরা আছো উত্তর, আর উদ্ধার।

 হে স্বাধীনতা

- শামসুর রাহমান

তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা,

তোমাকে পাওয়ার জন্যে

আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায় ?

আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন ?

তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,

সাকিনা বিবির কপাল ভাঙলো,

সিঁথির সিঁদুর গেল হরিদাসীর।

তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,

শহরের বুকে জলপাইয়ের রঙের ট্যাঙ্ক এলো

দানবের মত চিৎকার করতে করতে

তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,

ছাত্রাবাস বস্তি উজাড হলো। রিকয়েললেস রাইফেল

আর মেশিনগান খই ফোটালো যত্রতত্র।

তুমি আসবে ব’লে, ছাই হলো গ্রামের পর গ্রাম।

তুমি আসবে ব’লে, বিধ্বস্ত পাডায় প্রভূর বাস্তুভিটার

ভগ্নস্তূপে দাঁডিয়ে একটানা আর্তনাদ করলো একটা কুকুর।

তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,

অবুঝ শিশু হামাগুডি দিলো পিতামাতার লাশের উপর।

তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা, তোমাকে পাওয়ার জন্যে

আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায় ?

আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন ?

স্বাধীনতা, তোমার জন্যে এক থুত্থুরে বুডো

উদাস দাওয়ায় ব’সে আছেন – তাঁর চোখের নিচে অপরাহ্ণের

দুর্বল আলোর ঝিলিক, বাতাসে নডছে চুল।

স্বাধীনতা, তোমার জন্যে

মোল্লাবাডির এক বিধবা দাঁডিয়ে আছে

নডবডে খুঁটি ধ’রে দগ্ধ ঘরের।

স্বাধীনতা, তোমার জন্যে

হাড্ডিসার এক অনাথ কিশোরী শূন্য থালা হাতে

বসে আছে পথের ধারে।

তোমার জন্যে,

সগীর আলী, শাহবাজপুরের সেই জোয়ান কৃষক,

কেষ্ট দাস, জেলেপাডার সবচেয়ে সাহসী লোকটা,

মতলব মিয়া, মেঘনা নদীর দক্ষ মাঝি,

গাজী গাজী ব’লে নৌকা চালায় উদ্দান ঝডে

রুস্তম শেখ, ঢাকার রিকশাওয়ালা, যার ফুসফুস

এখন পোকার দখলে

আর রাইফেল কাঁধে বনে জঙ্গলে ঘুডে বেডানো

সেই তেজী তরুণ যার পদভারে

একটি নতুন পৃথিবীর জন্ম হ’তে চলেছে –

সবাই অধীর প্রতীক্ষা করছে তোমার জন্যে, হে স্বাধীনতা।

পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে জ্বলন্ত

ঘোষণার ধ্বনিপ্রতিধ্বনি তুলে,

মতুন নিশান উডিয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক

এই বাংলায়

তোমাকেই আসতে হবে, হে স্বাধীনতা।

একুশের কবিতা

- মহাদেব সাহা

ভিতরমহলে খুব চুনকাম, কৃষ্ণচূড়া

এই তো ফোটার আয়োজন

বাড়িঘর কী রকম যেন তাকে হলুদ অভ্যাসবশে চিনি,

হাওয়া একে তোলপাড় করে বলে, একুশের ঋতু!

ধীরে ধীরে সন্ধ্যার সময় সমস্ত রঙ মনে পড়ে, সূর্যাস্তের

ন্নি সরলতা

হঠাৎ আমারই জামা সূর্যাস্তের রঙে ছেয়ে যায়,

আর আমার অজ্ঞাতে কারা আর্তনাদ করে ওঠে রক্তাক্ত রক্তিম

বলে তাকে!

আমি পুনরায় আকাশখানিরে চেয়ে দেখি

নক্ষত্রপুঞ্জের মৌনমেলা,

মনে হয় এঁকেবেঁকে উঠে যাবে আমাদের

ছিন্নভিন্ন পরাস্ত জীবন,

অবশেষে বহুদূরে দিগন্তের দিকচিহ্ন মুছে দিয়ে

ডাক দেবে আমরাই জয়ী!

Tag: প্রকৃতি নিয়ে কবিতা , বিদায় কবিতা , শীতের কবিতা , একুশের কবিতা , নজরুলের কবিতা,  কাজী নজরুল ইসলাম কবিতা, মুক্তিযুদ্ধের কবিতা

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)